ভারতবর্ষ জুড়ে পালিত হলো ৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস
1 min readসেখ আব্দুল আজিম (ফুরফুরা), ভারত বর্ষ জুড়ে পালিত হলো ৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস । পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী আলকোরায়েশী ভাইজান ফুরফুরা শরীফ আহলে সুন্নাতুল জামাত (এ) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করলেন। এ বছরও তিনি বিগত বছরের ন্যায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন সহ কৃতি ছাত্রদের সম্বর্ধনা ও শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। পতাকা উত্তোলনের পরপরই বক্তব্য পর্ব চালু হয়।এদিন পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী সাহেবের বক্তব্য শোনার জন্য মানুষের ভিড় ছিল লক্ষণীয় । তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামীদেরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন ,স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন। তেমনি বর্তমান ভারত বর্ষের অবস্থা নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বললেন পরাধীন ভারতে যেমন ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ভারতকে লুটে পুটে খেয়েছেন, তেমনি স্বাধীন ভারত বর্ষ কেও লুটে পুটে খাওয়ার চিন্তাতে মগ্ন হয়ে আছে কিছু দল, কিছু নেতা । আমাদের সেটি হতে দিলে চলবে না। তিনি বর্তমান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মনিপুর রাজ্যের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আনিশ খান, আবু সিদ্দিকীর সহ অন্যান্যদের হত্যার বিচার না হওয়ায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। আর, জি, কর হাসপাতালে যে ভাবে ড: মৌমিতা দেবনাথকে শারীরিক নির্যাতন করে, খুন করা হল , তার বিরুদ্ধে এদিন সোচ্চার হন। প্রকৃত দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী তোলেন।তিনি আরো বলেন শুধুমাত্র স্বাধীনতার দিন জাতীয় পতাকাকে সম্মান করে বাকি ৩৬৪ দিন জাতীয় পতাকার অবমাননা করলে চলবে না ।জাতীয় পতাকাকে সারা বছর শ্রদ্ধা করে এবং মান্যতা দিয়ে চলতে হবে । স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ত্যাগ যেন বৃথা না যায় তার জন্য আমাদের সারা ভারতবর্ষের জনগনকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ না করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রেখে চলতে হবে। তিনি আরো বললেন ভারতীয় সংবিধানকে সম্মান করতে হবে এবং সংবিধানের প্রতিটি কথা সকল ভারতবাসীর মেনে চলা উচিত। এদিন তিনি সমাজে শিক্ষার প্রসারের জন্য সকলের কাছে আবেদন রাখেন ।আব্বাস সিদ্দিকী সাহেব যে একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ঘরের ছেলে তা তানার বক্তব্যের মধ্যেই প্রস্ফুটিত হচ্ছিল।সম্প্রীতিকালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সিনিয়র হাই মাদ্রাসা বিভাগের ২০২৩- ২৪ বর্ষের আলিম পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছিল এবং আলিম পরীক্ষায় সেখ সাহিম আলি “চতুর্থ স্থান” অধিকার করে ও ফিরোজ পাল “অষ্টম স্থান” অধিকার করে এবং ফাজিল পরীক্ষায় সাহিদ আক্তার “প্রথম স্থান”, দীন ইসলাম খান “অষ্টম স্থান” ও এম, এ, এইচ মোনতাজীম আনসারী “নবম স্থান” অধিকার করেছেন, এদিন স্বাধীনতা দিবসের শুভক্ষণে পাঁচ কৃতি ছাত্রের হাতে আব্বাস সিদ্দিকী সাহেব একটি ” সম্মাননা পত্র “, একটি করে চেক, একটি করে দাদা হূজুর (রহ:) এর জীবনী, অসিয়ত নামা তুলে দেন এবং শাল দিয়ে ও উত্তরীয় পরিয়ে তাদেরকে বরণ করে নেন। তাদেরকে সম্মাননা প্রদান করতে পেরে ফুরফুরা শরীফ আহলে সুন্নাতুল জামাত (এ) অত্যন্ত আপ্লুত ও গর্ববোধ করে এবং আগামী দিন এই কৃতি ছাত্ররা সমাজকে অনুপ্রেরিত করবে তা উল্লেখ করেন পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী সাহেব। আগামী দিন তাদের পথচলা শুভ হোক ও তাদের এই সাফল্য অব্যাহত থাকুক এই কামনা করে দোয়া রাখেন মহান আল্লাহ পাকের কাছে।”শিক্ষা আনে চেতনা, আর চেতনা সমাজ গড়ে”, সমাজে শিক্ষার সচেতনতা গড়ার কাজ ফুরফুরা শরীফ আহলে সুন্নাতুল জামাত (এ) বহুদিন যাবৎ করে আসছে এবং তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ এই সংগঠনের বর্তমান পরিচালক পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী সাহেব নিজেই । তিনি প্রায় 40 টিরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজে হাতে গড়েছেন এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত আছেন । আজ তিনি শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে প্রায় ১০০ জন ছোট ছোট বাচ্চাদের হাতে শিক্ষা সামগ্রী তুলে দেন এবং তাদেরকে পড়াশুনা করে বড় মানুষ হওয়ার কথা বলেন। অনুষ্ঠানটিকে আলোকিত করতে উপস্থিত ছিলেন আবু আফজাল জিন্না সাহেব (রিসালাত পত্রিকার বার্তা সম্পাদক), উপস্থিত ছিলেন আব্দুল ফাত্তাহ সাহেব (ফুরফুরা সিনিয়র মাদ্রাসার হোস্টেল ইনচার্জ), অফিস সম্পাদক ও রিসালাত পত্রিকার প্রচার সচিব আবু সালেহ মুসা সাহেব এবং মনজুর হোসেন (ফুরফুরা শরীফ আহলে সুন্নাতুল জামাত (এ) দত্তপুকুর থানা শাখা কমিটির কোষাধ্যক্ষ)।পরিশেষে সোয়াবরে-সানি ও মিষ্টি মুখ করিয়ে আজকের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা হয়। আজকের ৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নলেজ সিটিতে তিনি নিজে হাতে গাছ কয়েকটি গাছ লাগান। এদিন ৫০০ বৃক্ষ রোপন করার ব্যবস্থা করেন। এছাড়াও উল্লেখ্য পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী সাহেবের নির্দেশে সারা পশ্চিমবাংলা জুড়ে তার সংগঠনের কর্মীরা স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দত্তপুকুর থানা কমিটি সহ বিভিন্ন শাখা কমিটি পতাকা উত্তোলনসহ এদিন শিক্ষা সামগ্রীর বিতরণ সহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজ অনুষ্ঠিত করে।