কোন্নগর বইমেলা’য় অমীমাংসিত বিতর্ক
1 min readসৌরভ আদক : কোন্নগর বইমেলায় এ’বছর দেখা গেলো এক অভিন্ন চিত্র। যেখানে বিতর্কের বিষয় খোদ শাসক দলের মুখ্যপত্রিকা’র একটি স্টলের অবস্থানকে ঘিরে।
খোদ শাসক দলের মধ্যেই দ্বি’মত এবার প্রকাশ্যেই, বইমেলায় শ্রীরামপুর এর সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জী তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য পত্রিকা’র স্টলের অবস্থান নিয়ে পৌরসভার পৌরপ্রধান স্বপন দাস’কে বইমেলায় সবার সামনেই অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। ভিতরে কেন জায়গা হয়নি তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য পত্রিকা’র স্টলের? প্রশ্ন তোলেন সাংসদ।
স্বপন দাসের উদ্দেশ্যে।
তিনি বলেন, এটা আমি মানতে পারছি না, কোন্নগর শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তন্ময় দেবের নেতৃত্বে কোন্নগর বইমেলার বাইরেই দেখতে পাওয়া যায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য পত্রিকা’র স্টল। মেলার মূল অনুষ্ঠান মঞ্চের পাশে আছে কোন্নগর সবুজ যোদ্ধা নামে একটি বুকস্টল স্থান পেয়েছে। যেখানে মুখয়মন্ত্রীর লেখা নানান বই বিক্রি হচ্ছে পাঠকদের জন্য।
সাংসদ এ’বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন, কেন দুটি বুকস্টল করা হবে কোন্নগর মেলায়? তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য পত্রিকার স্টল বাইরে কেন হবে। তিনি দাবী করেন, মুখ্য পত্রিকা’র স্টল উচিৎ ছিলো মেলায়। তিনি ব’লেন, এটা ঠিক হয়নি, এটা আমি মানতে।পারছি না।
পৌরপ্রধান সাংসদ’কে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য পত্রিকা’র জায়গা মূল মঞ্চের পাশেই দেওয়া হয়েছিলো, সাংসদ ক্ষুব্ধ হয়ে স্বপন দাসে বলেন ও’পাশটা কে দেখতে যায়, ফালতু কথা কেন বলছিস? এরপর বাইরে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য পত্রিকা’র স্টলে যান। যদি’ও পৌরপ্রধান এ’বিষয়ে জানান, এটি সরকারী অনুষ্ঠান, এখানে রাজনৈতিক বিষয় নেই।
রাত পেরোতে না পেরোতেই বইমেলা পরিদর্শন করতে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী ববি হাকিম। স্বপন দাসের ভূয়সী প্রশংসার সাথে সাথে ‘সবুজ যোদ্ধা’ স্টলেরও প্রশংসা ও প্রচার করেন জনসমক্ষে। তিনি জানান, সিপিএমের কোনো স্টল এই মেলায় আছে কিনা আমি জানিনা, সিপিএমের স্টল থাকলে দেখবেন সেখানে মার্কসবাদ আছে, লেলিনবাদ আছে, মাওবাদ আছে, বিজেপির স্টলে গয়েলকাবাগ আছে, আমাদের সেরকম কোনো থিওরি নেই। আমরা তৃণমূল পার্টিটা করি, আমাদের কোনো থিওরি নেই। আমাদের থিওরি হচ্ছে, ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল,টু দ্য পিপল, অর্থাৎ মানুষের দ্বারা, মানুষের হয়ে, মানুষের কাজ করে। তিনি বলেন, ‘এই স্টলটায় যদি যান, কোন্নগরের সবুজ যোদ্ধা, আমাদের সেই থিওরি গুলো নিয়ে, মমতা ব্যানার্জীর জীবনের লড়াই, সেইগুলো নিয়ে অনেকগুলো বই আছে মমতা ব্যানার্জীর।
এ’বিষয়ে রাজ্য বিজেপির অফিস সেক্রেটারি প্রণয় রায় জানান, তৃণমূল কংগ্রেস আর বই এটার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। তার কারণ, তৃণমূল কংগ্রেস বহুধা বিভক্ত একটি দল এবং যারা এই দলটা করে, তারা একটা করে কাউন্টার খুলে বসে থাকে। আমিও কোন্নগর বইমেলায় দেখেছি, বইমেলা ডানদিকের মাঠে হচ্ছে, আর বাঁ’দিকে যেদিকে কচুরি বিক্রি হয়, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য পত্রিকার স্টল দেখেছি, সারাদিন সেখানে কোনো লোকজন দেখিনি। তিনি জানান, আসল বিষয়টি হচ্ছে গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব, তিনি জানান, মুখ্য পত্রিকা’র স্টলে যিনি বসেছিলেন, তিনি হয়তো চেয়ারম্যান ঘনিষ্ঠ নয়। তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের দলীয় মুখ্য পত্র তৃণমূলের ক’টা লোক পড়েন বলুন’তো, ক’টা লোক জানে তৃণমূলের মুখ্য পত্র বলে একটা আছে। তিনি দাবী করেন, দলীয় মুখ্য পত্রিকা’র স্টলে কোনো সময়ে তিনি নাকি কচুরি বিক্রি হতেও দেখেছেন।
রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম দলীয় মুখ্য পত্রিকা’র স্টলে না দাঁড়ানোয় সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় তুলেছেন দলের’ই একাংশের কমী সমর্থক। বিরোধীদের প্রশ্ন দলের অন্দরেই গুরুত্ব কমছে মুখ্য পত্রিকা’র। অর্থাৎ কোন্নগর বইমেলা থেকেই প্রকাশ্যে আসে, শাসক দলের দুই হেভিওয়েট নেতার দ্বিমত।।